এবিএনএ : চলছে জেএসসি পরীক্ষা।পরীক্ষা চলাকালীন শিশুর জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। কারণ এই সময়ে অতিরিক্ত পড়ার কারণে মানসিকভাবে শিশুরা চাপের মধ্যে থাকে।পরীক্ষা চলাকালীন প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের বাড়তি যত্ন নেয়া। যে কোনো সমস্যার জন্য সন্তানের প্রতি আপনার মনোযোগ বাড়াতে হবে। সন্তান পড়ালেখা ঠিকমতো করছে কিনা, ঘুমাচ্ছে কিনা, খাবার খাচ্ছে কিনা- এ ছাড়া পরীক্ষার রুটিন ঠিক আছে কিনা- এ বিষয়গুলো সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে।
পরীক্ষা চলাকালীন শিশুদের বাড়তি যত্নের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগী অধ্যাপক ডা. মানিককুমার তালুকদার (শিশু বিশেষজ্ঞ)।
ডা. মানিককুমার তালুকদার বলেন, পরীক্ষার সময় শিশুদের পড়ার চাপ বেশি পড়ে।এক্ষেত্রে একটু বাড়তি যত্ন তো নেয়াই যেতে পারে। পরীক্ষার এই সময়ে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখা প্রয়োজন, তা হল বাইরের খাবার একেবারে খাওয়া যাবে না। বাইরেরই খাবার খেলে শিশুরা অসুস্থ হবে।এমনও হতে পারে অসুস্থ হয়ে পরীক্ষাই দিতে পারল না। তাই এই বিষয়টিকে আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই।এ ছাড়া অতিরিক্ত রাত না জাগা, অতিরিক্ত পড়ার চাপে না রাখা, প্রোটিনজাতীয় খাবার খাওয়া, মার্কস পড়া, খেলা ও টিভি দেখার জন্য সময় দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
পরীক্ষার সময়ে কীভাবে নেবেন সন্তানের বাড়তি যত্ন। আসুন জেনে নিই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়-
বাইরে নয়, খেতে হবে ঘরের খাবার
পরীক্ষা চলাকালীন কখনোই বাইরের খাবারা খাওয়া যাবে না।কারণ বাইরে খাবার খেলে পেটের পীড়া, আমাশা, ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে।আর অসুস্থ হলে পরীক্ষা দেয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই এ সময় বাইরের খাবার নয়, খেতে হবে ঘরের খাবার।
প্রোটিনজাতীয় খাবার
পরীক্ষা চলাকালীন শিশুকে প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন সকালে একটি ডিম ও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুখ খাওয়াতে হবে। এছাড়া মাছ, মাংস ও সবজিও খাওয়া যেতে পারে।
অতিরিক্ত পড়ার চাপ
পরীক্ষার সময় পড়ার জন্য শিশুকে অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না। এ সময় স্বাভাবিক পড়ার নিয়মে পড়ে রিভিশন শেষ করতে হবে। অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে আপনার সন্তানের পরীক্ষা খাবার হতে পারে।
রাত ১১টার মধ্যে ঘুমাতে যাওয়া
পরীক্ষা চলাকালীন বেশি রাত জাগা যাবে না। এ সময় রাত ১১টার মধ্যে বিছানায় ঘুমাতে যেতে হবে।১১টার বেশি রাত জাগা কোনোভাবেই শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
খুব সকালে পড়ার অভ্যাস
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারলে ভালো।কারণ সকালে পড়ার অভ্যাস করতে পারলে স্মরণশক্তি রাড়ে।পড়া বেশি মনে থাকে। তবে নিজে থেকে উঠতে না চাইলে তাকে জোর করা যাবে না।
জোর করে ঘুম থেকে ওঠানো
সন্তানকে ঘুমানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিন। কোনোভাবেই তাকে ঘুমে থেকে জোর করে ডেকে তুলবেন না। কারণ ঘুম পরিপূর্ণ না হলে ব্রেইনে সমস্যা দেখা দেবে। পরীক্ষা খারাপ হতে পারে।
বেশিক্ষণ গোসল করা যাবে না
এখন আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। তাই এখন বেশি সময় ধরে গোসল করা যাবে না।এই সময়ে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা।
মার্কস ব্যবহার করা
বাইরে ধূলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মার্কস ব্যবহার করতে হবে।কারণ ধূলাবালি থেকে এলার্জি সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
টিভি ও খেলাধুলা
অনেক বাবা-মা আছেন যারা সন্তাদের পরীক্ষার সময়ে খেলাধুলা ও টিভি দেখতে নিষেধ করেন। কিন্তু এটি মোটেই ঠিক নয়।পড়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময়ে টিভি দেখা বা খেলাধুলা শিশুরা করতেই পারে। এক্ষেত্রে পড়ার ওপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না।